Tuesday, February 20, 2007

একটি লাল কবিতার খসড়া


মাঝে মাঝে ভাবি, একুশ একটি কবিতা
ফেব্রুয়ারির উষ্ণ কপাল জুড়ে ছোপ ছোপ রক্তে আঁকা
অদ্ভুত এক চিত্রকল্প
আমি জানি, রাষ্ট্রভাষার তুমুল শ্লোগান হলো
ছন্দের প্রথম সবক
শফিউরের রক্ত হলো কালির প্রস্রবণ
পৃথিবীর শেষ বাংলা অক্ষরে যার গন্ধ থাকবে অমলিন
আর বরকত হলো নিখাঁদ বর্ণমালা
মেদ-গন্ধহীন নিরহংকার চারটি ঝকঝকে অক্ষর।

আমি ভেবে দেখেছি নির্ভূল
বায়ান্ন না পেরুলে ঊনসত্তর আসেনা, আসেনা একাত্তর
সোনালী মানচিত্র আসেনা সবুজ পতাকা বুকে
বর্ণমালা না থাকলে শব্দ থাকেনা, শ্লোগান থাকেনা
ডিসেম্বরের কঠিন বাতাসে ভাসেনা জাতীয় সঙ্গীত

আমি জানি, বটতলার ওই প্রচন্ড বিক্ষোভ ছাড়া
মহাকালে হারিয়ে যেতো এই টুকরো স্বদেশ
অগ্নিবীণা থাকতোনা, থাকতোনা পান্ডুলিপি ধুসর
তিতাসের বিষণ্ণ বেলাভূমে ইতস্তত ছড়িয়ে থাকতোনা
নুনের গন্ধমাখা সোনালী কাবিন

ভয় কি?
তুমুল রক্তের শপথে
একবার যারা বায়ান্ন পেরিয়েছে
তারা সহস্র পেরুবে অনিবার্য সহজ উৎসবে।

হেঁটে চলা অবিরাম...


সতেরোশ' মানুষের স্রোত
কিংবা তারও অধিক অনেক
রঙিন বেদানার মতো গড়িয়ে পড়ছে
শহরের থালা থেকে
আর ক্ষুধার্ত আঙুল আমি খাড়া করেছি
এইসব থালার সরোবরে
বহুতল টাওয়ারের মতো
সার্ক ফোয়ারার মতো
আমার আঙুল ছুঁয়ে উড়ে যায়
শত-সহস্য সুতীব্র ফলজ ঘ্রাণ
তবু আমি তীর্থমুখী অভিযাত্রিক
প্রখর অলস মধ্যাহ্ন কিংবা
মরিচিকাময় সহস্র আরব্য-রজনী
তৃষ্ণাকাতর বুকে
একাকি হেঁটে চলেছি অবিরাম।